কটিয়াদী নামকরনের ব্যাপারে বিভিন্ন জনশ্রুতি রয়েছে। কেউ বলেন, প্রাচীন আমলে আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে আসন গড়েছিলেন ‘কটি ফকির’ নামে এক কামেল দরবেশ। কথিত আছে এই ‘কটি ফকির’ আধ্যাত্মিক সাধনের মাধ্যমে মানুষের উপকার করতেন। এই কটি ফকিরের নামানুষারেই কটিয়অদী নামের উৎপত্তি হয়। আবার কেউ বলেন, কটিযাদী ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ইংরেজ সাহেবদের অনেকগুলো নীলকুঠি ছিল। নীলকুঠির নীলকর সাহেবদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কেনা-কাটার জন্য আড়িয়াল খাঁ নদের উক্তর পাড়ে গড়ে ওঠে ছোট্র একটি বাজার। এই নীল কুঠির কুঠি থেকে কুঠিয়াদী এবং পরবর্তীতে কটিয়াদী নামে পরিচিত। আবার কেউ কটিয়াদী নামকরনের ব্যাপারে অন্য মত পোষণ করেছেন। ‘শতাব্দীর অন্তরালে’ প্রন্থে কবি আবদুল হান্নান উল্লেখ করেছেন-আজ হতে আটশত বৎসর পূর্বে এগারসিন্দুরের প্রাচীন ইতিহাসে সামন্ত কোচ রাজাদের মধ্যে বেরোধী নামে এক রাজার নাম রয়েছে। তিনি অত্যন্ত সমআনিত রাজা ছিলেন। আমরা লক্ষ করছি যে, বেরোধী শব্দটির শেখ অংশটা দীদ্বার পূর্ণ আর এই ‘ধী’ বা ’দি’ শব্দটির বহুল প্রচালন দেখা যায় বিভিন্ন স্থান ও নামের পাশে। যেমন-নরসিংদী, বাধবদী, পুরাদী, মনোহরদী, হোসেন্দী, তারাকান্দি, বিন্নাদী, গোলাপদী, নারান্দী, পাকুন্দী, রামদী, আজলদী, চরফরাদী, মানিকদী, সাগরদী এবং কটিযাদী। এমন অনেক নামের সঙ্গে এই দী’র বহুল প্রচলন আছে তাহলে নিশ্চিত যে এ দী’টি অতি সম্মানসূচক বা বিশেষ অর্থবোধক। কারণ এসব নাম সাধারণত অর্থবোধক হয়। আমরা যদি বেবোধী র রাজার দী’র দিকে তাকাই তাহলে ঐ দী’টিএক সম্মানসূচক বলে ধরে নিতে পারি। যেমন-আজকে বাবুজী, নেতাজী, শেখজী ইত্যাদি জী’গুলো সম্মানসূচক। সেকালেও সম্মাসূচক অর্থে এই দী’র ব্যবহার ছিল। কিংবা সুন্দরের প্রতীক ছিল। তাই ধারণা করা হচ্ছে যে, বেবোদী রাজার উক্তরসূরীগণ ‘দী’ শব্দগুলোরর স্থানে বসবাস করলে তাদের নামানুষারেই বামকরণ। তাই কটিয়াদী মানকরণের দিকেও এই যুক্তি প্রমাণ রয়েছে। এমনও হতে পারে কটি ফকির বেবোধী রাজার আত্মীয় বা উত্তরসূরী হিসাবে তার নামের প্রথম শব্দ কটি এবং রাজার ‘ধী’ উপাধি সংযুক্ত করে কটিয়াদী থেকে পরবর্তী সময়ে কটিয়াদী নামকরণ হয়েছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস